পঞ্চমবারের মতো জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিষদের সদস্য হয়েছে বাংলাদেশ। গত সপ্তাহে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে ছয় প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে নির্বাচনে ১৮৯ ভোটের মধ্যে বাংলাদেশ ১৬০ ভোট পায়, যা ছিল সর্ব্বোচ্চ। তিন বছর মেয়াদের জন্য এই সদস্যপদ পেলো বাংলাদেশ। এর আগে ২০০৬, ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ তে নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে বাংলাদেশ ভালোভাবেই জয়লাভ করেছিল। কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে মানবাধিকার বিষয়ক বৈশ্বিক নিয়ম তৈরি এবং এর প্রচারণা ও রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান যে ৯টি কনভেনশন আছে, তার মধ্যে আটটিতে অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশও আটটি কনভেনশনে সই করেনি।
তিনি বলেন, মানবাধিকার কাউন্সিলে নিয়মিত বিভিন্ন রেজুলেশন বা অন্য ইস্যুতে আলোচনা হয়, যেখানে বাংলাদেশ গঠনমূলক ভূমিকা নিয়ে থাকে। ছোট দেশগুলোর জন্য সমস্যা তৈরি হয় এমন অনেক ইস্যুতে বাংলোদেশ নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে। ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে এবং আমাদের সম্পর্কে অন্য দেশের মতামতকে বিবেচনায় নিয়ে তাদের পরামর্শ গ্রহণ করে বলে তিনি জানান। ২০১৮ সালে ইউপিআরে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার সময়ে অন্যদেশের ১৭৮টি পরামর্শ গ্রহণ করেছে সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘২০০৬ সালে মানবাধিকার কাউন্সিল গঠনের পর এবং এর আগে যখন এটি কমিশন ছিল, তখনও বাংলাদেশ গঠনমূলক দায়িত্ব পালন করেছে।’
কাউন্সিলের সদস্য থাক বা না থাক, বাংলাদেশ সবসময় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের যেসব প্রক্রিয়া আছে সেগুলো আমরা মেনে চলি। যেমন তাদের ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ বা বিভিন্ন স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার বিষয়ক যে মেকানিজমগুলো আছে সেগুলোর বিষয়ে আমরা সম্পৃক্ত।
নির্বাচনে ভালো করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কী ভূমিকা রাখি সেটি নিশ্চয় অন্য ভোটার দেশগুলো অনেক বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এর একটি মূল্যায়ন করেছে। এটির একটি বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখতে পাই এই নির্বাচনে।’
এছাড়া মানবাধিকার ইস্যু ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয় যেমন শান্তি, জলবায়ূ পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আমাদের যে অগ্রণী ভূমিকা সেটিও বাংলাদেশের পক্ষে গেছে এবং অন্যদেশগুলো সেটিও মূল্যায়ন করেছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এছাড়া আমরা ক্যাম্পেইন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে করেছিলাম। কেউ এমনি এমনি কাউকে ভোট দেয় না। আমরা বেশ আগে থেকে গুরুত্বের সঙ্গে এবং ধারাবাহিকভাবে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেছি।